দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় কার্যকর নয় উল্লেখ করে এই প্রস্তাবটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি মনে করে, উচ্চকক্ষ গঠনের পরিবর্তে বর্তমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থাকে আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করাই সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারবে?’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এ সুপারিশ তুলে ধরেন সিপিডির গবেষকরা।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন
সংলাপে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিজাম আহমেদ গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
তারা জানান, সংসদীয় সংস্কার ও জবাবদিহিতা বিষয়ক একটি গবেষণার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কনসেনসাস কমিশনের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে—চূড়ান্ত প্রস্তাব তালিকা থেকে ‘উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব’ বাদ দেওয়ার জন্য।
গবেষণার মূল বক্তব্য:
সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়,
বাইক্যামেরালিজম (দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ),
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব,
দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগে কমিটি গঠন
— এসব ধারণা নীতিগতভাবে আকর্ষণীয় হলেও, বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “এ ধরনের সংস্কার কার্যত প্রতীকী হয়ে থাকবে এবং এতে জবাবদিহি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।”
সংসদ ব্যবস্থার সংস্কারে সিপিডির প্রস্তাব:
সিপিডি বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে যেসব সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে—
সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধী দলীয় এমপিদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ
রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত
স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করা
নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়ানো
দলত্যাগ রোধে আইন সংস্কার
এছাড়া, সরকারের নির্বাহী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ পদে সরকারের নিয়োগের ক্ষমতা রাখার পক্ষে মত দেয় সিপিডি, তবে এসব নিয়োগ সংসদীয় পর্যালোচনা কমিটির মাধ্যমে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
সিপিডির মতে, উচ্চকক্ষ গঠনের মতো কাঠামোগত পরিবর্তনের বদলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা জবাবদিহিমূলক সংসদ গঠনের মূল চাবিকাঠি। তাই আগামী দিনের সংসদ সংস্কারে বাস্তবধর্মী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফজর | ৪:০৯ - ৫:২৮ ভোর |
---|---|
যোহর | ১১:৫৯ - ৪:৩১ দুপুর |
আছর | ৪:৩২ - ৬:২৫ বিকাল |
মাগরিব | ৬:২৭ - ৭:৪৫ সন্ধ্যা |
এশা | ৭:৪৬ - ৪:০৮ রাত |
জুম্মা | ১.৪০ মিনিট দুপুর |